শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে এখন পর্যন্ত শনিবার খোলা আছে। তবে সেটা আসলে সাময়িক একটি প্রক্রিয়া। সেই দিবসের বিষয়ে আমাদের যদি পরিপূর্ণ একটি চিত্র পাওয়া যায়, তাহলে ঈদুল আজহা পরবর্তী সময়ে তখন হয়তো সেটা থাকবে না৷ তিনি বলেন এখন দেখা যাচ্ছে যে, ঘূর্ণিঝড়ের একটা প্রকোপ আছে এবং বন্যাসহ অন্যান্য চ্যালেঞ্জ যদি আসে তবে সে সময় স্কুল বন্ধ থাকবে। তখন বন্ধ থাকলে শিক্ষনীয় বিষয়ে ফল অর্জনটা অনেক বেশি কঠিন হয়ে যায়। শনিবার খোলা রাখাটা প্রত্যাশিত নয়। যেহেতু কিছুদিন নষ্ট হয়েছে। আমরা আশা করছি যে, সেটা থাকবে না।
শুক্রবার (২৪ মে) বিকেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) আয়োজিত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের যোগাযোগ উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তেব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীদের কিছুসংখ্যক সরকারি চাকরির যে হাতছানি সেটার প্রতি ধাবিত হওয়ার যে একটা মানসিকতা শিক্ষার্থীদের সৃষ্টি হয়েছে যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ট্রোলিং হচ্ছে। বলা হচ্ছে যে, লাইব্রেরি কি শুধু সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জায়গা নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে শুধু পাঠ্যবই নয়, এর বাইরে অনেক গবেষণাধর্মী বিষয়ের উপরে জ্ঞান আহরণ ও চর্চার জায়গা? শিক্ষার্থীদের এমন মানসিকতার পরিবর্তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, অ্যালামনাইগণ সবাই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে কর্মরত নয়। জীবনের নানা ক্ষেত্রে আপনারা সফলতা পেয়েছেন। আমাদের সন্তানদেরও যেন আমরা সেভাবে শিক্ষা দিতে পারি সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। ২০২৬ সাল থেকে নতুন কারিকুলাম দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কার্যকর হবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, দ্বাদশ নয়, দশম শ্রেণি পর্যন্ত। এই কারিকুলামে প্রথম যে পরীক্ষা হবে, তা দশম শ্রেণিতে হবে।
পরীক্ষা কোন পদ্ধতিতে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখন আমাদের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবে, তখন আমরা জানাব। এখন একটা সমস্যা হচ্ছে, যদি স্পেক্টেকুলেশন বেশি হয়, তাহলে আমাদের শিক্ষার্থীরা আসলে বিভ্রান্ত হন এবং অভিভাবকরাও বিভ্রান্ত হবেন, শিক্ষকরাও হবেন। সেই কারণে এখন কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে সামষ্টিক মূল্যায়নের যে বিষয়টি আছে, কার্যক্রমভিত্তিক যে মূল্যায়ন সেগুলো একটা ভারসাম্যের মধ্যে আনা হয়েছে। আমাদের যে অনেক বিভাগ ছিল সেটিও কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। যেহেতু আমাদের আবার মাদ্রাসাভিত্তিক শিক্ষা পদ্ধতির সাথে সমন্বয় করতে হবে তাই এই মুহূর্তে বলাটা খুব কঠিন এবং সেটা বলা সমীচীনও হবে না। পদ্ধতি সুনির্দিষ্ট হলেই আমরা সবার সামনে প্রকাশ করব।
শনিবারে ক্লাসের বিষয়টি সুনির্দিষ্ট করা গেছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের তো আসলে শিখনফল অর্জনের জন্য কিছু শিক্ষা কর্মদিবস সেটি নির্দিষ্ট করতে হয় বছরব্যাপী। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে এখন পর্যন্ত শনিবার খোলা আছে। তবে সেটা আসলে সাময়িক একটি প্রক্রিয়া। সেই দিবসের বিষয়ে আমাদের যদি পরিপূর্ণ একটি চিত্র পাওয়া যায়, তাহলে ঈদুল আজহা পরবর্তী সময়ে তখন হয়তো সেটা থাকবে না৷ কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যে, ঘূর্ণিঝড়ের একটা প্রকোপ আছে এবং বন্যাসহ অন্যান্য চ্যালেঞ্জ যদি আসে, সে সময় স্কুল বন্ধ থাকবে। তখন বন্ধ থাকলে শিক্ষনীয় বিষয়ে ফল অর্জনটা অনেক বেশি কঠিন হয়ে যায়। শনিবার খোলা রাখাটা প্রত্যাশিত নয়। যেহেতু কিছু দিন নষ্ট হয়েছে। আমরা আশা করছি যে, সেটা থাকবে না।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শামসুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডক্টর আবুল মনসুর আহাম্মদ। স্বাগত বক্তব্য দেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মাসরুর জামান রনি।