ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের অটো রাইসমিল ও ড্রায়ার মিলগুলোতে ঝরনা লাগানোর নির্দেশ স্থানীয় এমপির
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে অটোরাইসমিল ও চাতাল মিল থেকে নির্গত কালো ধোয়া, ছাই ও রাইস ব্রান বাতাসে ছড়িয়ে পরিবেশের ক্ষতি করছে। মিল থেকে নির্গত রাইস ব্রান মানুষের চোখে পড়ে ক্ষতি হচ্ছে জনস্বাস্থ্যের। এসব বিষয়ে বার বার মিল মালিকদের সময় দেয়া হলেও তারা কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার পরিবেশ ও প্রতিবেশ দূষণমুক্ত রাখার পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য ঝুঁকিমুক্ত রাখাসহ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বিধি-বিধান মেনে অত্র উপজেলাধীন অটোরাইস মিল ও চাতাল কলসমূহের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে করণীয় বিষয়ে চাতাল মালিক ব্যবসায়ীদের সাথে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে মিল মালিকদের তিন মাসের মধ্যে রাইস ব্রান, ছাই ও কালো ধোয়া বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
শনিবার (১১ মে) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে মিল মালিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মঈন উদ্দিন মঈন। তিনি উপস্থিত থেকে অটো রাইসমিল ও চাতাল মিল থেকে নির্গত কাল ধোয়া, ছাই ও রাইস ব্রান বাতাসে যেন ছড়িয়ে না যায় সেজন্য কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে তিন মাসের সময় বেধে দেন। পাশাপাশি আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সমস্ত মিলগুলো থেকে যেন কালো ধোয়া ও রাইস ব্রান বাতাসে না মিশে এজন্য ব্যবস্থা নেয়ার চূড়ান্ত সময় বেধে দেয়া হয়।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাকের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, আশুগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা শারমিন, আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাহিদ আহমেদ, জেলা চাতাল কল মালিক সমিতির সভাপতি হাজী জহিরুল ইসলাম জারু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম ভূইয়া স্বপন, উপজেলা চাতালকল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি জোবায়ের হায়দার বুলু, বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোজাম্মেল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক শাহাদাত হোসেন ,শহর শিল্প ও বনিক সমিতির সভাপতি গোলাম হোসেন ইপটি, চাতাল ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন, কামরুল ইসলাম, শাহ আলমসহ বিশেষ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক বলেন, আগামি অক্টোবর মাসের মধ্যে ঝরনা ও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সকল মিলে সকল কাজ শেষ করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে যদি কেউ কাজ শেষ না করে তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব। এটা চূড়ান্ত সময়। আর কোন সময় দেয়া হবে না। এরপর আমরা আইনের প্রয়োগ করব। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. মঈন উদ্দিন মঈন বলেন, আশুগঞ্জে অটো রাইসমিল ও চাতাল মিল থেকে নির্গত কালো ধোয়া, ছাই ও রাইস ব্রান বাতাসে ছড়িয়ে পরিবেশের ক্ষতি করছে। মিল থেকে নির্গত রাইস ব্রান মানুষের চোখে পড়ে ক্ষতি হচ্ছে জনস্বাস্থ্যের।
আমরা ব্যবসা করব তবে জনসাধারণের ক্ষতি করে না। সমাজের সাধারণ মানুষের
কাছে আমরা ওয়াদাবদ্ধ। তাই সবাই এক হয়ে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। বাতাসে যেন ছাই, ধোঁয়া ও রাইস ব্রান না ছড়ায় সেই জন্য সকলেই তিন মাসের মধ্যে ঝরনা লাগাতে হবে। আর তা না করলে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।