দেশের বিভিন্ন স্থানে ধরা পড়ায় দেশব্যাপী আলোচনায় বিষধর সাপ চন্দ্রবোড়া বা রাসেল ভাইপার। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই সাপের বিষক্রিয়া নিয়ে চলছে আলোচনা। কিন্তু সাপটি নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফেসবুকে শুরু হয়েছে গুজব।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকাল থেকে স্থানীয় কয়েকটি ফেসবুক ভিত্তিক গ্রুপে শহরের পুনিয়াউটসহ কিছু এলাকায় রাসেল ভাইপার সাপ পাওয়ার পোস্ট দেওয়া হয়। এসব পোস্ট দ্রুত ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট আইডি থেকে ছড়িয়ে পরে। ফেসবুকে এসব ছবি ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে যাচাই করে জানা যায় এসব ছবি অন্য জেলার৷
বাংলাদেশের বেশ কিছু জেলায় রাসেল’স ভাইপার সাপ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে অনেকে নানাভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। অনেকে প্রচার করছেন যে সাপটি কামড় দিলে দ্রুত মানুষের মৃত্যু হয়।
পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে রাসেল’স ভাইপার সাপ মেরে ফেরার প্রচারণাও চালানো হচ্ছে ফেসবুকে। এমন অবস্থায় ফরিদপুরের একজন রাজনীতিবিদ প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন যে রাসেল’স ভাইপার সাপ মারতে পারলে প্রতিটির জন্য ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হবে।
অনেকে বলছেন, রাসেল’স ভাইপার খুব দ্রুত বংশ বিস্তার করে। ফলে সহসা বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে এই সাপের আধিক্য মানুষের জন্য হুমকি তৈরি করবে।
প্রশ্ন হ্ছে, রাসেল’স ভাইপার নিয়ে যে মাত্রায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে তা কতটা যৌক্তিক?
সাপ গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন এ প্রজাতির সাপ কামড়ালে তারও চিকিৎসা আছে এবং সময়মত চিকিৎসা নিতে পারলে মৃত্যু ঝুঁকি কমে আসে।
বেসরকারি সংস্থা ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন বলছে রাসেল’স ভাইপার
মোটেও দেশের সবচেয়ে বিষধর কিংবা প্রাণঘাতী সাপ নয়।
বরং দেশে প্রতি বছর সাপের কামড়ে যত লোক মারা যায় তার অর্ধেকই মারা যায় পাতি কেউটে সাপের কামড়ে। তবে সময়মত চিকিৎসা না নিলে রাসেল’স ভাইপারের কামড়েও মৃত্যু হতে পারে।
তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কোথাও রাসেল ভাইপার উদ্ধার কিংবা এর কামড়ে কেউ আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এ খবর নিশ্চিত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন।
তিনি জানান, জেলার কোথাও রাসেল ভাইপার সাপে কেউ আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলেনি। যদি কেউ এই সাপে আক্রান্ত হয় দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে। আক্রান্ত কাউকে যেন কবিরাজের কাছে নিয়ে কালক্ষেপণ না করা হয়। কবিরাজ সাপে কাটা রোগীর শরীরে ক্ষত তৈরি করে। এতে করে ইনফেকশন হয়।
তিনি আরও জানান, এছাড়াও এই সাপের বিস্তার সম্পর্কে এখনো কোনো তথ্য মেলেনি। প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম মজুত আছে। ঢাকায়ও অনেক আছে, প্রয়োজনে আমরা আরও নিয়ে আসবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (চলতি দায়িত্ব) রতন কুমার ঢালি জানান, আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম রয়েছে। যা দিয়ে আগামী তিন মাস রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া যাবে