প্রায় পঞ্চাশ কোটি টাকা ব্যায়ে আশুগঞ্জ সাইলোর বিএমআরই (ব্যালেন্সিং, আধুনিকায়ন, বিস্তার এবং প্রতিস্থাপন)কাজ শেষে উদ্বোধন করলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র দাস এমপি। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুরে আশুগঞ্জ সাইলোতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এর উদ্বোধন করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ মঈন উদ্দিন মঈন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ইসমাইল হোসেন এনডিসি, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ শাখাওয়াত হোসেন, অতিরিক্ত মহা পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্যামল চন্দ্র বসাক,আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জিয়াউল করিম খান (সাজু)।
স্বাগত বক্তৃতা করেন সাইলো অধিক্ষক খন্দকার সেরাজুস সালেকি।
খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিদেশ থেকে আমদানিকৃত সরকারি গমের উল্লখযোগ্য পরিমান আশুগঞ্জ সাইলোতে খালাস করা হয়। পঞ্চশ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ৫২ বছরেরও বেশি সময়ের পুরাতন সাইলোটি ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছিল। বর্তমানে সাইলোর যন্ত্রপাতি পুরাতন হওয়ায় কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া যাচ্ছিলনা। সাইলোটির ব্যাগিং হাউজ, ডেলিভারি সিস্টেম, ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম, কনভেয়র ব্রিজ, জেটি, সাব-স্টেশন, কন্ট্রোল রুম সিস্টেম, পুরাতন স্কেল, বেল্টের কাউন্টার, ওয়েট বুথ ইত্যাদি পুরাতন হওয়ার অপারেশনাল কার্যক্রমে প্রায়ই বিঘ্ন ঘটত। এতে করে যথাসময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে গম সরবরাহের জটিলতা দেখা দিত। ফলে সাইলোটির বিএমআরই (ব্যালেন্সিং, আধুনিকায়ন, বিস্তার এবং প্রতিস্থাপন) করার উদ্যোগ নেই খাদ্য মন্ত্রণালয়।
সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বেলজিয়ামের প্রতিষ্ঠান ভিগান ইঞ্জিনিয়ারিং এসএ সাইলোটি বিএমআরই করার কাজটি সম্পন্ন করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বিএমআরই করার কারণে সাইলোটি আবার পূর্ণ যৌবন ফিরে পেয়েছে। একটি নতুন সাইলো নির্মাণে যেখানে ৭শ থেকে ৮শ কোটি টাকার প্রয়োজন হত, সেখানে মাত্র ৪৭ থেকে ৪৮ কোটি টাকা খরচ করে এটিকে আগের অবয়বে নিয়ে আসা হয়েছে। আগামী ২০/২৫ বছর এতে আর হাত দিতে হবেনা। তিনি বলেন, আরো অনেক আগেই সাইলোটির বিএমআরই করা দরকার ছিল। কিন্তু কোন সরকার তা করেনি। বর্তমান সরকার তা করেছে।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র দাস আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ। কোভিড ও বিভিন্ন দেশের যোদ্ধাবস্থার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে দুর্বিক্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা হাইড করেছে। জনগণকে হতাশ করেনি। বিচক্ষণতার সাথে মোকাবিলা করেছে। আগে গরীবেরা রুটি খেত। এখন গরীবেরা পেট ভরে ভাত খায়, আর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে ধনীরা রুটি খায়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে খাদ্যমন্ত্রী নির্মাণাধীন আশুগঞ্জ রাইস সাইলো পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য যে, সাইলো উদ্বোধনের পূর্বে খাদ্য মন্ত্রীকে গার্ড অফ অনারের মাধ্যমে সালাম প্রদর্শন করেন পুলিশের একদল চৌকস সদস্যরা এবং মন্ত্রী তাদের সালাম সাদরে গ্রহণ করেন। এ সময় তার সঙ্গে জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন মেহেদী হাসান মেনন।