ছবির ক্যাপশান,ধূমপান ছাড়ার জন্য আপনার ইচ্ছা যথেষ্ট
মো: আমানুল্লাহ পেশায় একজন প্রকৌশলী।
এক সময় প্রতিদিন তার ১০টি সিগারেট লাগতো ধূমপানের জন্য।
বছর তিনেক হলো মি: আমানুল্লাহ ধূমপান ছেড়েছেন।
কিভাবে ধূমপান ছাড়লেন তিনি?
মি: আমানুল্লাহ বলেন, “কোন উপায় নেই। একদিন হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নিলাম সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দেব। এটা জাস্ট একটা ডিসিশন। অন্য কিছু না।”
ধূমপান ছেড়ে দেবার পর প্রথম তিন-চার মাস সেটি ধরে রাখতে বেশ কষ্ট হয়েছে তাঁর। এরপর থেকে আর কখনও ধূমপান করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন না মি: আমানুল্লাহ।
ধূমপান করা এবং না করার মধ্যে শারীরিকভাবে বিরাট পার্থক্য আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
“পার্থক্য অনেক। এখন ঘুম ভালো হয়। যখন ধূমপান করতাম তখন অনেক সময় ক্ষুধা লাগলেও খেতে ইচ্ছা করতো না। কিন্তু এখন সে ধরনের সমস্যা নেই,” বলছিলেন মি: আমানুল্লাহ।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা একবার কৌতূহল বশত একটি সিগারেট পান করেছে তাদের অনেকেই পরবর্তীতে পুরাদস্তুর ধূমপায়ী হয়ে গেছেন।
তামাকজাত পণ্য ব্যবহারের কারণে প্রতি বছর ৬০ লাখ মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে ধূমপানের বিষয়টি সবচেয়ে সামনে আসে।
ধূমপান ছাড়বেন কিভাবে?
বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত চিকিৎসক অরূপ রতন চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই তামাকজাত পণ্যে ব্যবহারের বিপক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মি: চৌধুরীর মতে ধূমপান একটি আসক্তির মতো। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে নিম্নোক্ত পন্থাগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
১. আজ এখুনি ধূমপান ছাড়ার প্রতিজ্ঞা করুন। টেবিল কিংবা পকেটে রাখা সিগারেটের প্যাকেট ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলুন
২. একদিন ধূমপান না করে দেখুন। এরপর পার্থক্য অনুভব করার চেষ্টা করুন। এরপর দুইদিন , তিনদিন ধূমপান থেকে দূরে থাকুন। তাহলে অভ্যাস গড়ে উঠবে।
৩. আপনার আশপাশে যারা ধূমপান বর্জন করেছে তাদের অনুসরণ করুন। তাদের স্বাস্থ্যগত কী পরিবর্তন এসেছে সেটি জানার চেষ্টা করুন।
৪. একটা হিসেবে করে দেখুন তো সিগারেট কিংবা তামাকজাত পণ্যের জন্য প্রতিমাসে আপনার কত টাকা খরচ হয়? হিসেব করে দেখলে ধূমপান ছাড়া আপনার জন্য সহজ হবে। সে টাকা জমিয়ে অন্য খাতে খরচ করতে পারেন।
৫. আপনার ধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গ সুকৌশলে এড়িয়ে চলুন।
৬. সিগারেট ছাড়ার পর মুখে চুইংগাম কিংবা আদা চিবোতে পারেন। তাহলে ধূমপানের প্রতি আকর্ষণ কমে আসবে।
৭. যে সময়টিতে আপনার ধূমপান করতে ইচ্ছা করবে সে সময়ে রাস্তায় হাঁটুন। তাহলে ধূমপানের চাহিদা থাকবে না।
৮. যে কোন জায়গায় ধূমপান কর্নার থেকে দূরে থাকুন
৯. ধূমপান বিরোধী এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার বই পড়তে পারেন
১০. নিরুপায় হলে সর্বশেষ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে কাউন্সেলিং-এর সহায়তা নিতে পারেন। চিকিৎসক অরূপ রতন চৌধুরী বলছেন, ধূমপান ছাড়ার জন্য কোন প্রস্তুতির দরকার নেই। আপনার একটি সিদ্ধান্তই যথেষ্ট।
সোর্সঃ বিবিসি বাংলা