আশুগঞ্জের কৃতি সন্তান জয়পুরহাট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নুরে আলমকে তার কর্মদক্ষতা, সততা, আন্তরিকতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার মাধ্যমে অপরাধ দমন কার্যক্রমে উযোগ্য ভূমিকা রাখা, পুলিশি সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণ এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রশংসনীয় অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার “বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল” (বিপিএম) পদকে ভুষিত হয়েছেন। এ উপলক্ষে চলতি বছরের(২৭ ফেব্রুয়ারী -২০২৪) মঙ্গলবার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স প্যারেড গ্রাউন্ডে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জের কৃতি ও সুর্যসন্তান জয়পুরহাট পুলিশ সুপার (এসপি)মোহাম্মদ নুরে আলমকে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বিপিএম-সেবা’ পদক পরিয়ে দেন।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম (বার), পিপিএম উপস্থিত ছিলেন।
প্রতি বছর পুলিশ বাহিনীর সদস্যগণের অসীম সাহসিকতা, বীরত্বপূর্ণ কাজ, গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁদের বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)সেবা এর মাধ্যমে পুরস্কৃত করা হয়। উল্লেখ্য যে গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, টানা ১৪ বার ওয়ারেন্ট তামিলে শ্রেষ্ঠ, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণে প্রশংসনীয় অবদান রাখায় আশুগঞ্জের কৃতি সন্তান জয়পুরহাট পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ নুরে আলম এবছরের ২৭ জানুয়ারী বিপিএম (সেবা) পদক পেয়েছেন। নূরে আলম তাঁর কর্মদক্ষতার জন্য ২০২৩ সালে পুলিশের ওয়ারেন্ট তামিলে একাধিকবার পুরস্কার লাভ করেছেন।
এ পদক প্রাপ্তিতে আশুগঞ্জের কৃতি সন্তান ও জয়পুরহাট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নুরে আলম প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, রেঞ্জ ডিআইজি, রাজশাহী জেলা সহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন। এ পদক প্রাপ্তি জেলা পুলিশের সকল সদস্যের অর্জন বলে উল্লেখ করেছেন মোহাম্মদ নুরে আলম (এসপি)।
তিনি তার সকল সহকর্মীসহ সম্মানিত জয়পুরহাট জেলাবাসির প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, পুলিশ সপ্তাহের উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি হল– ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতির ভাষণ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, প্রধান বিচারপতি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং আইজিপির সঙ্গে ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারদের সম্মেলন। আইজি’স ব্যাজ, শিল্ড প্যারেড, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার পুরস্কার বিতরণ।এছাড়া পুলিশ সপ্তাহের বিভিন্ন কর্মঅধিবেশনে গত এক বছরের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে পরবর্তী বছরের কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হবে।
মোহাম্মদ নুরে আলম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রামের নাগড়পাড়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আক্তারুজ্জামের বড় ছেলে।৫ ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় নুরে আলম।বাকী ৪ জনের মধ্যে একজন ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর ও অপর ৩ জন ব্যবসায়ী।মোহাম্মদ নুরে আলম ২০০৬ সালে ২৫তম বিসিএস পুলিশ সার্ভিসের মাধ্যমে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ লাভ করেন।সর্বশেষ তিনি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন। সেখান থেকে তিনি পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। প্রথমে রাঙ্গামাটি সদর সার্কেল, কলাপাড়া সার্কেল পটুয়াখালী, শিবালয় সার্কেল মানিকগঞ্জ, সহকারী পুলিশ কমিশনার,চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ, ময়মনসিংহ জেলা ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ সুপার হিসেবে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি-ডিবি এবং বর্তমানে পুলিশ সুপার হিসেবে জয়পুরহাট জেলায় কর্মরত আছেন।
অতিসাম্প্রতি বিভিন্ন বিষয়, সমাজ ব্যবস্থা, কিশোরগ্যাং সহ নিজের ব্যাক্তিগত নানা তথ্য নিয়ে কথা হয় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলমের সঙ্গে। ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-পদক প্রাপ্তির ব্যাপারে জানতে চাইলে মোহাম্মদ নুরে আলম বলেন,আমার জন্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার
আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। আমার বাবা ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। সেই হিসেবে পারিবারিকভাবেই দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি পূর্ব থেকেই আমার ও আমাদের পরিবারের ভালোবাসা ছিল এবং এখনও তা রয়েছে। আমি মনে করি- মানুষের সেবা করার মত মহৎ কাজে এত আনন্দ আছে যা অন্য সব কাজের চেয়ে ভিন্ন। এমন মহৎ কাজ করার সুযোগ আর কোন চাকুরিতে আছে বলে আমার মনে হয়না। কেবলমাত্র পুলিশ পেশা থেকে সেটা সরাসরি সম্ভব এবং সেটি করা যায় বলে আমি বাল্যকাল থেকেই তা মনে করেছিলাম। এ আখাঙ্খার কারনেই ছোট বেলা থেকেই আমার পুলিশ হওয়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল এবং সেই আগ্রহ থেকে ২০০৬ সালে ২৫ তম বিসিএসের মাধ্যমে পুলিশের চাকুরিতে যোগদান করি।পুলিশ হওয়ার পিছনে আমার বাবা-মা দুজনেরই অসামান্য অবদান রয়েছে। তবে আমার বাবা যেহেতু একজন ব্যবসায়ী ছিলেন তথাপি তিনি আমাকে ব্যবসায়ী না বানিয়ে দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করার জন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তা বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পাশাপাশি আমার মায়ের উৎসাহ -উদ্দীপনাও আমাকে পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ার ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তানের জনক। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিভাগে অনার্স এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
পুলিশ সুপার মুহাম্মদ নুরে আলম বিগত ২০২২ সালের ২২ আগস্ট জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার হিসেবে জয়পুরহাট
জেলায় যোগদান করেন।মোহাম্মদ নূরে আলম অত্যন্ত মেধাবী, দক্ষ ও বুদ্ধিদীপ্ত এ কর্মকর্তা পুলিশ সুপার হিসেবে জয়পুরহাট জেলায় দায়িত্ব গ্রহণের পর হতেই জেলা পুলিশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধুনিকায়ন ও অপরাধ দমনে সাফল্য অর্জন, একই সাথে জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা প্রতিটি ক্ষণেই বৃদ্ধি পায়, সে লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন।তার এ পদক প্রাপ্তিতে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেছেন জাতীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডি টাইমস নিউজ এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা ও দৈনিক দেশকাল পত্রিকার আশুগঞ্জ প্রতিনিধি মোঃ জহির সিকদারসহ আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সকল নেতৃবৃন্দ। তার এ কৃতিত্বে ব্রাহ্মণবাগিয়া জেলা সহ আশুগঞ্জবাসী গর্ববোধ করছে এবং সেই সাথে ভবিষ্যতে আরো অনেকদুর এগিয়ে যাবে নুরে আলম(এসপি) এ কামনা ব্যক্ত করেন।